ল্যাংরাজ্বর (চিকুনগুনিয়া) শেষ হইয়াও হইল না শেষ’


 ল্যাংরাজ্বর (চিকুনগুনিয়া) শেষ হইয়াও হইল না শেষ’
ল্যাংরা জ্বর বা চিকুনগুনিয়া
 

চিকুনগুনিয়া এখন আতঙ্কের নাম। এই জ্বর তিন থেকে চার দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে হাড়ের জোড়ের ব্যথা কমতে চায় না। ব্যথার তীব্রতাও প্রচণ্ড। রোগীর স্বাভাবিক হাঁটাচলা, হাত দিয়ে কিছু ধরা এমনকি হাত মুঠ করতেও বেশ কষ্ট হয়। তবে কখনো কখনো গিঁটের ব্যথা কয়েক মাস এমনকি কয়েক বছরের বেশি সময় থাকতে পারে। আর শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে। কাজে অনীহা দেখা দেয়। উদ্যম বা শারীরিক-মানসিক শক্তিও কমে যায়। জ্বর ভালো হওয়ার পরেও তাই কিছু নিয়মকানুন ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।

এই রোগের চিকিৎসা
চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা মূলত উপসর্গভিত্তিক। এই রোগের বিশেষ কোনো ওষুধ বা টিকা নেই। একটানা তিন দিন জ্বর ও হাড়ের জোড়ে প্রচণ্ড ব্যথা থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে কোনো উপকার নেই। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পাশাপাশি ডাবের পানি, স্যালাইন, লেবুর শরবত প্রভৃতি পান করতে হবে। পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।

চিকিৎসাপরবর্তী করণীয়
আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম নিতে হবে, প্রচুর পানি ও তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল ট্যাবলেট এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ওষুধ খেতে হবে।

জোড়ে ব্যথা থাকলে কী করবেন?
জ্বরের পরেও বিভিন্ন জোড় বা জয়েন্টে ব্যথা থাকলে, তাকে পোস্ট চিকুনগুনিয়া আর্থ্রাইটিসও বলা যায়। এই জ্বরের পর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দীর্ঘদিন ধরে হাড়ের জোড়ে ব্যথা থাকে। এমনকি জোড় ফোলাও থাকতে পারে। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল বা ট্রামাডল-জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

কারও কারও ক্ষেত্রে এ ব্যথা দীর্ঘায়িত হতে পারে। চিকুনগুনিয়া কিন্তু অপ্রকাশিত বাতরোগকে বিশেষ করে রিউমেটিক আর্থ্রাইটিসকে প্রকাশ করে দিতে পারে। তাই ব্যথা দীর্ঘায়িত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বয়স্কদের বা অন্য রোগে আক্রান্তের বেলায় ব্যথা জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এই জ্বরপরবর্তী সময়ে বিশ্রামে থাকার চেষ্টা করতে হবে। ভারী বা বেশি পরিশ্রম হয় এমন কাজ যাবে না। না হলে ব্যথা বাড়তে পারে। তবে হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে এবং ফিজিওথেরাপি নেওয়া যেতে পারে। দীর্ঘ সময় একই জায়গায় বসে থাকা ঠিক নয়। ঠান্ডা সেঁক দিলে ব্যথা অনেকাংশে কমে যায় বা আরাম পাওয়া যায়।

ত্বকের র্যাশ ভালো হবে কীভাবে?
চিকুনগুনিয়ার র্যাশ লালচে, হামের মতো। পিঠ, বুক, কাঁধ, মুখ—সবখানেই হতে পারে। কারও র্যাশ জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে আবার কারও পরে হয়। এই র্যাশ অনেকের এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে অনেকের জ্বর সেরে যাওয়ার পর ত্বকের রং কালচে, চুলকানি বা অ্যালার্জি-জাতীয় দানা হতে পারে। এমনকি লালচে বড় দানা হতে পারে, যা ভীষণ চুলকায় ও অস্বস্তিদায়ক। সে ক্ষেত্রে অ্যান্টি অ্যালার্জি-জাতীয় ওষুধ, ত্বকে লাগানোর মলম ব্যবহার করলে তাড়াতাড়ি আরাম পাওয়া যায়।

দুর্বলতা না কাটলে কী করবেন?
ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, সব ভাইরাল জ্বরের পর শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই জ্বর থাকাকালীন ও পরবর্তী সময়ে প্রচুর তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। অনেক সময় শরীরে লবণের পরিমাণ কমে গিয়ে, রক্তচাপ কমে গিয়ে মাথা ঘোরাতে পারে। তাই রক্তচাপ মেপে যদি কম থাকে, তাহলে মুখে খাবার স্যালাইন খেতে হবে। এই সময়ে শাকসবজি, বিভিন্ন ফলমূল বেশি করে খাওয়া যেতে পারে। তিন সপ্তাহ পরও যদি দুর্বলতা না কমে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চিকুনগুনিয়ার পর অনেকের বিশেষ করে হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া, ঝিনঝিন বা কামড়ানোর মতো ব্যথা হতে পারে। আবার কেউ বিষণ্নতায় ভুগতে পারে। প্রচণ্ড ব্যথা, কাজে ফিরতে না পারা, দৈনন্দিন কাজগুলোও ঠিকভাবে করতে না পারা এই ঝুঁকি বাড়ায়। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেকের এই রোগে আক্রান্তের পর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে নতুন অন্য অসুখ সংক্রমণ করতে পারে। তাই সাবধান থাকতে হবে এবং প্রচুর তরল ও পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ, পরিচ্ছন্নতা বোধ এবং যথেষ্ট বিশ্রাম এই ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে পারে।

প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণই আসল!
এ রোগ প্রতিরোধের কোনো টিকা নাই। ব্যক্তিগত সচেতনতাই চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রধান উপায়। মশার কামড় থেকে সুরক্ষাই চিকুনগুনিয়া থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায়। শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢাকা রাখা (ফুল হাতা শার্ট এবং ফুল প্যান্ট পরা), জানালায় নেট লাগানো, প্রয়োজন ছাড়া দরজা-জানালা খোলা না রাখা, ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা, শরীরে মশা প্রতিরোধক ক্রিম ব্যবহার করার মাধ্যমে মশার কামড় থেকে বাঁচা যায়। শিশু, অসুস্থ রোগী এবং বয়স্কদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
মশার আবাসস্থল ও এর আশপাশে মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে। বাসার আশপাশে ফেলে রাখা মাটির পাত্র, কলসি, বালতি, ড্রাম, ডাবের খোলা ইত্যাদি যেসব জায়গায় পানি জমতে পারে, সেখানে এডিস মশা প্রজনন করতে পারে। এসব স্থানে যেন পানি জমতে না পারে, সে ব্যাপারে লক্ষ রাখতে হবে। বাড়ির আশপাশ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
যেহেতু আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত থেকে জীবাণু নিয়ে মশা অন্য মানুষকে আক্রান্ত করে, কাজেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে যাতে মশা কামড়াতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।
লেখক: চিকিৎসক


আরো কিছু তথ্যঃ
চিকুনগুনিয়া (Chikungunya) হচ্ছে চিকুনগুনিয়া মশাবাহিত ভাইরাসজনিত একটি রোগ। আমাদের অতি পরিচিত ডেঙ্গুর সঙ্গে এর বেশ কিছুটা মিল রয়েছে। ডেঙ্গুর মতোই এ ভাইরাসটিও এডিস ইজিপ্টাই এবং এডিস অ্যালবপ্টিকাস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। চিকুনগুনিয়া ডেঙ্গুর মতই মানবদেহ থেকে মশা এবং মশা থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে থাকে। মানুষ ছাড়াও বানর, পাখি এবং ইঁদুরে এ ভাইরাসের জীবনচক্র বিদ্যমান।অনেকের ভাইরাস জ্বর বা ডেঙ্গু জ্বর হয়ে সেরে যাওয়ার পরও দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরে শরীর ভাল যাচ্ছে না। সাধারণত যে কোনো ভাইরাস কিংবা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। অথচ দেখা যাচ্ছে জ্বর সেরে গেলেও রোগী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ও দুর্বলবোধ করছেন, বিশেষ করে শরীরের বিভিন্ন গিটে গিটে ব্যথা, দুর্বলতা এবং ক্লান্তি খুব ভোগাচ্ছে। এসকল ক্ষেত্রে ডেঙ্গু হিসেবে সন্দেহ করা হলেও এ রোগটি সম্ভবত ডেঙ্গু নয়, বরং এটি চিকুনগুনিয়া নামক একটি মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষা বিশেষ করে ভাইরাস পৃথকীকরণ, RT-PCR কিংবা সেরোলজির মাধ্যমে এ রোগ শনাক্ত করা যেতে পারে। রোগীর রক্তে ভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া এন্টিবডি দেখে এ রোগ সনাক্ত করা যেতে পারে। এতে অনেক ক্ষেত্রে ২ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা মূলত রোগের উপসর্গগুলোকে নিরাময়ের মাধ্যমে করতে হয়। এ রোগের কোনো প্রতিষেধক নেই এবং কোন টিকাও এখনও পর্যন্ত আবিস্কার হয়নি। এ রোগে আক্রান্ত রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে এবং প্রচুর পানি বা অন্যান্য তরল খেতে দিতে হবে। জ্বরের জন্য সাধারন প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধই যথেষ্ট। মাঝে মাঝে পানি দিয়ে শরীর মুছে দেয়া যেতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথার ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে। নিজে নিজে কোন ওষুধ না খাওয়াই ভাল।
রোগীকে যেন মশা না কামড়ায় এ জন্য রোগীকে অবশ্যই মশারির ভেতরে রাখতে হবে। কারণ- আক্রান্ত রোগীকে কামড় দিয়ে, পরবর্তীতে কোনো সুস্থ লোককে সেই মশা কামড় দিলে ওই ব্যক্তিও এ রোগে আক্রান্ত হবেন।
চিকুনগুনিয়া হচ্ছে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের দুই থেকে চার দিনের মধ্যে আকস্মিক জ্বর শুরু হয় এবং এর সাথে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকে যা কয়েক সপ্তাহ, মাস বা বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
এই রোগে মৃত্যু ঝুঁকি প্রতি দশ হাজারে এক জন বা এর চেয়েও কম তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই রোগের জটিলতা তুলনামূলক বেশি হয়। এই ভাইরাসটি মশার কামড়ের মাধ্যমমে মানব শরীরে প্রবেশ করে। এডিস(Aedes) গণের দুটি প্রজাতি "এডিস ইজিপ্টি" ও "এডিস অ্যালবপ্টিকাস" এই ভাইরাসের বাহক হিসেবে পরিচিত। মানুষ ছাড়াও বানর, পাখি, তীক্ষ্ণ দন্ত প্রাণী যেমন ইঁদুরে এই ভাইরাসের জীবনচক্র বিদ্যমান। এখানেই ডেঙ্গু ভাইরাসের সাথে এর পার্থক্য কারণ ডেঙ্গু ভাইরাস শুধু স্তন্যপায়ীদের আক্রান্ত করে।
এই রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় হলো মশা নিয়ন্ত্রণ ও ঘুমানোর সময় মশারি টাঙানো। এই ভাইরাসের সুপ্তিকাল ২-১২ দিন তবে বেশিভাগ ক্ষেত্রে তা তিন থেকে সাত দিন হয়। অনেক সময় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। সাধারণত ৭২-৯৭% ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেয়। রোগটি সাধারণত আকস্মিক উচ্চমাত্রার জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা ও ফুসকুড়ি নিয়ে শুরু হয়। ফুসকুড়ি রোগের শুরুতেই দেখা দিতে পারে তবে অনেক সময় রোগ শুরু হওয়ার দুই থেকে তিন দিন পর জ্বর কমতে শুরু করলে ফুসকুড়ির আবির্ভাব হয়। এছাড়া অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেটব্যথা, ফটোফোবিয়া বা আলোর দিকে তাকাতে সমস্যা, কনজাংটিভাইটিস। বড়দের আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টে প্রদাহ হতে পারে। চিকুনগুনিয়া ভাইরাস "টোগাভাইরিডি" পরিবারের "আলফাভাইরাস" গণের অন্তর্ভুক্ত একটি RNA ভাইরাস।
এটি সেমলিকি ফরেস্ট ভাইরাস কমপ্লেক্স এর সদস্য এবং রস রিভার ভাইরাস, ও'নিয়ং'নিয়ং ভাইরাস ও সেমলিকি ফরেস্ট ভাইরাসের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। যেহেতু এটা আর্থ্রোপড যেমন মশার মাধ্যমে ছড়ায় তাই একে "আর্বোভাইরাস"ও বলে। ভাইরাস পৃথকীকরণ, RT-PCR, সেরোলজির মাধ্যমে পরীক্ষাগারে ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এই রোগের বিরুদ্ধে কার্যকরী অনুমোদিত কোনো টিকা নেই। মশা নিয়ন্ত্রণ ও ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো, লম্বা হাতলযুক্ত জামা ও ট্রাউজার পরে থাকা, বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে না দেয়া ইত্যাদি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। শুধু স্ত্রী মশা দিনের বেলা কামড়ায়। এরা একবারে একের অধিক ব্যক্তিকে কামড়াতে পছন্দ করে। একবার রক্ত খাওয়া শেষে ডিম পাড়ার পূর্বে তিন দিনের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়।এদের ডিমগুলো পানিতে এক বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।অল্প পরিমাণ জমে থাকা পানিও ডিম পরিস্ফুটনের জন্য যথেষ্ট।এডিস মশা স্থির পানিতে ডিম পাড়ে তাই বালতি, ফুলের টব, গাড়ির টায়ার প্রভৃতি স্থানে যেন পানি জমতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া


Comments

Popular posts from this blog

দাদ-হাজা-চুলকানির চোটে জেরবার? এগুলো সারিয়ে তুলুন এই ৮ টি ঘরোয়া পদ্ধতি Dada-Haza-itchana small to save? Correct these 8 domestic methods.

Imgamma - Download V2 - PIN (CH)

চিকুনগুনিয়া তো সেরেছে কিন্তু ব্যথা সারেনি।কি করবেন? Chikunagunya fever is good but pain is not good. What will you do?